বাঙালির ঐতিহ্যবাহী একটি রেসিপির নাম আলু পোস্তো । সাধারনত বাঙালরা পোস্তর ব্যবহার ততটা করেন না । এই মেনুটি ঘটিদের মধ্যে বেশি পরিচিত। তবে ঘটি হোক বা বাঙাল সখে হোক বা অভ্যাসে এই আলু পোস্তের স্বাদে কেউই বঞ্চিত নন। দূর্গা পূজার মরসুমে অষ্টমী বা দশমীতে পাতে চাই লুচি আর আলু পোস্ত। এ যেন বাঙালির সহজাত আকর্ষণ।
আমি আমার মায়ের থেকে আলু পোস্তর রেসিপি শিখেছিলাম যখন আমি ব্যাঙ্গালোর চাকরি করতে যাই। আমি অবাক হয়েছিলাম যখন দেখলাম এটা তৈরির জন্য কোন পেঁয়াজ রসুন লাগে না অথচ স্বাদে গন্ধে অতুলনীয়। আমি আরও অবাক হয়েছিলাম যখন দেখলাম এটা তৈরি করতে সময়ও অনেক কম লাগল।
আমার বন্ধু রঞ্জিত রাঠোর (অবাঙালি) এই আলু পোস্ত খেয়ে তো প্রশংসায় পঞ্চমুখ। রঞ্জিত এর কথায় – ‘আরে ইয়ার , এ ক্যায়া হে , আভিতাক এয়সা চীজ কভি নেহি খায়া, আব তো হার সানডে তেরি ঘর আনা পাড়েগা। ‘ মজার ব্যাপার হলো দুমাসের মধ্যে ওর ট্রানেস্ফার হয়ে গেছিল। যাওয়ার আগে রেসিপিটা শিখে নিয়েছিল। যাই হোক এরকম অনেক গল্পই প্রতিটি বাঙালির কাছে পরিচিত বিশেষ করে যারা প্রবাসী । চলুন জেনে নিই কিভাবে আলু পোস্ত তৈরি করা যাবে।

আলু পোস্ত তৈরির উপকরণ:
- ৪ টে বড়ো আলু
- ৫ টেবিল চামচ পোস্ত বীজ
- ৪ টে মাঝারি কাঁচা লঙ্কা
- ½ চা চামচ পেঁয়াজ বীজ
- লবন পরিমাণ মত
- ২ টেবিল চামচ সরষের তেল
- ½ চা চামচ হলুদ গুঁড়ো
- ১ টেবিল চামচ জল
কিভাবে আলু পোস্ত তৈরি করবেন:
- প্রথমে পোস্ত বীজ পরিষ্কার জলে ২০- ৩০ মিনিট ভিজিয়ে নিতে হবে , যাতে করে ঘন তরল পেষ্ট তৈরি হয়।
- এবার ২- ৩ টে কাঁচা লঙ্কা ঐ পেষ্টের মধ্যে দিয়ে দিন। একটুখানি লবন যোগ করুন। খেয়াল রাখবেন পেষ্ট যেন পাতলা না হয়ে যায়।
- এবার আলু গুলো সুন্দর করে ছুরি দিয়ে কেটে নিন এবং পরিষ্কার জলে ভালো ভাবে ধুয়ে নিন।
- এখন একটা কড়াইয়ে তেল গরম করে পেঁয়াজ বীজ ভেঁজে নিন।
- তারপর ঐ গরম তেলে কেটে রাখা আলু ঢেলে দিন এবং মাঝামাঝি আঁচে ভাজতে থাকুন। ৩ – ৪ মিনিট এর মতো ভাজুন।
- এখন কিছুটা হলুদ গুঁড়ো এবং কাঁচা লঙ্কা দিয়ে নাড়াচাড়া করতে থাকুন ।
- এক কাপ জল দিয়ে কড়াই ঢেকে দিন।
- কিছুক্ষণ পর যখন আলু নরম হয়ে যাবে তখন পোস্ত এর পেষ্ট ঢেলে দিন এবং খুব সাবধানে নাড়াচাড়া করুন।
- কিছুক্ষণ পর জল শুকিয়ে যাবে । ব্যাস তৈরি আপনার প্রিয় আলু পোস্ত।
গরম ভাত বা লুচির সঙ্গে পরিবেশন করুন এই ঘরোয়া ঐতিহ্যবাহী বাঙালি খাবার।
Also Read- বর্ষাকালের ১০ টি বাঙালি খাবার